সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:২৬ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক,আলীকদম ॥
বান্দরবানের আলীকদম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দপ্তরী জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে কয়েকবছর আগে নানান অভিযোগে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা পরিদপ্তরের উপ-পরিচালকের কাছে দরখাস্ত দায়ের করেছিলেন বিদ্যালয়টির ৫ জন শিক্ষক ও একজন অফিস সহয়াক। অভিযোগের প্রতিকার না পেয়ে অভিযোগকারী তিনজন শিক্ষক স্বেচ্ছায় বদলী হয়ে অন্যত্র চলে যান। একজন গেছেন অবসরে। সেই সময়ে দপ্তরীর আচরণে অতীষ্ট হয়ে মোঃ জাহাঙ্গীর আলম আল মনছুরী নামে বিদ্যালয়টির সহকারি শিক্ষক ভয়ভীতি ও হুমকী প্রদর্শণের বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেন। সেই জিডির সত্যতা পাওয়ায় আলীকদম থানা থেকে প্যানাল কোডের ৫০৬ ধারায় আদালতে প্রসিকিউশন দাখিল করেন। প্রসিকিউশন নং- ২৯/২০১৭ তারিখ: ১৯/১০/২০১৭। এতকিছুর পরও দপ্তরী জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা পরিদপ্তর কোন ব্যবস্থা নেননি। এবার বিদ্যালয়টির নাইট গার্ড আব্দুল হামিদ এ দপ্তরীর বিরুদ্ধে ১০টি অভিযোগ এনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করেছেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ দুংড়িমং মার্মা, পার্বত্যমন্ত্রী প্রতিনিধি ও ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন ও ইউপি চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ¤্রাে।
প্রাপ্ত অভিযোগে প্রকাশ, দপ্তরী জাহাঙ্গীর আলম বিনাঅনুমতিতে বিদ্যালয়ের অবকাঠামো ব্যবহার করে স্বপরিবারে বসবাস করছেন। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে প্রায়সময় দুর্ব্যবহার করেন। বিদ্যালয়ের সাবেক ইংরেজি শিক্ষক শাহেরাজা বিপ্লব ও জাহাজীর আলম মনছুরীকে মারধর করা চেষ্টা করেন দপ্তরী জাহাঙ্গীর। এ সময় শিক্ষক মনছুরী থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করেন। দপ্তারী জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের পুকুর লীজ, বিদ্যালয়ের কোয়ার্টার ব্যবহার, বিদ্যালয় আঙ্গিনায় গরু-ছাগল পালন, বৃক্ষ কর্তন, বিদ্যালয়ের কম্পিউটার বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ করেন আব্দুল হামিদ। অভিযোগে প্রকাশ, দপ্তরী জাহাঙ্গীর সরকারি কর্মচারী হয়েও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে তার যৌথ পরিচালনাধীন একটি বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুলে সময় কাটান বেশী। সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিসের মালামাল তার পরিচালনাধীন বেসরকারি স্কুলে নিয়ে ব্যবহার করেন।
এর আগে বিদ্যালয়টির ৬ জন শিক্ষক-কর্মচারী দপ্তরী জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে স্কুলের বৃক্ষনিধন, কোচিং বাণিজ্য, অর্থ আত্মসাত ও পুকুরের লীজ নিয়ে অনিয়ম এবং শিক্ষকদের মারধরের হুমকীর প্রতিকার চেয়ে উপ-পরিচালকের নিকট অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে এ অভিযোগের প্রতিকার পাননি শিক্ষকরা। এ অবস্থায় অভিযোগকারী ৩ জন শিক্ষক বিদ্যালয় থেকে বদলী হয়ে অন্যত্র চলে যান। শিক্ষকদের অভিযোগে বলা হয়েছিল এ সময় প্রধান শিক্ষক ও দপ্তরী মিলে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা ‘বিদ্যালয়ের মানোন্নয়ন’ খাতের অর্থ আত্মসাত করেন। বিদ্যালয়ের অর্থ ব্যয়ে শিক্ষকদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির তোয়াক্কা করা হয়নি। এ সময় অনুমতি ছাড়া স্কুলের ৮টি গাছ কাটা হয়। বিদ্যালয়ের পুকুরে মাছ চাষ করেন দপ্তরী জাহাঙ্গীর। দপ্তরী কর্তৃক খারাপ আচরণের প্রতিকার চেয়ে গতবছরের ২৮ ডিসেম্বর প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন খ-কালীন শিক্ষক রনি কান্তি চৌধুরী।এসব অভিযোগের বিষয়ে দপ্তরী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আনীত অভিযোগগুলি কোন সময় প্রমাণিত হয়নি। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো মিথ্যা।
আপনার মতামত দিন