সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:২৮ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
বান্দরবানে আন্ত:স্কুল ও উন্মুক্ত দাবা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত বান্দরবানে মারমা সম্প্রদায়ের লোকসাংস্কৃতিক ও লোকনাট্য অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত বান্দরবানে বর্ণাঢ্য আয়োজনে শান্তি চুক্তির ২৬তম বর্ষপূর্তি পালিত একটুর জন্য বাদ পড়া থেকে রক্ষা পেলেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী শহীদুল বান্দরবানে নৌকার মনোনয়ন ফরম জমা দিলেন বীর বাহাদুর উশৈসিং বান্দরবানে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মহাপিন্ড দানের মাধ্যমে শেষ হলো কঠিন চীবর দানোৎসব নাইক্ষ্যংছড়িতে আওয়ামীলীগ পরিবারে বিএনপি নেতার হামলা ৭ম বারের মত ৩০০নং আসনে মনোনয়ন পেলেন বীর বাহাদুর রোয়াংছড়িতে ফিরে আসা বাসিন্দাদের মাঝে মানবিক সহায়তা প্রদান বান্দরবানে বর্ণাঢ্য আয়োজনে ত্রিপুরাদের নবান্ন উৎসব পালিত

পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি মাতৃভাষার বই পেল ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা

সোহেল কান্তি নাথ, নিজস্ব প্রতিনিধি বান্দরবান॥
বছরের প্রথম দিন পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি নিজ মাতৃভাষার বই পেল পার্বত্য জেলা বান্দরবানের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা। জেলার ৭টি উপজেলার চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ৪টি শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের দেয়া হয়েছে নিজ মাতৃভাষার ২৪২৫১ টি বই।

পার্বত্য জেলা বান্দরবানে রয়েছে ১১টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বসবাস। এসব ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের যেমনি রয়েছে নিজস্ব ভাষা, বর্ণ, তেমনি রয়েছে পোষাক, কৃষ্টি ও কালচার। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সংরক্ষনের অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে পাহাড়ের বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির ভাষা ও বর্ণমালা। তাই পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সম্প্রদায়ের ভাষা ও বর্ণমালা সংরক্ষণের লক্ষ্যে ২০১৭ সাল থেকে সরকার প্রাক প্রাথমিক, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নিজ মাতৃ ভাষার বই বিতরণ করে আসছে। আর বছরের প্রথম দিনে পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি নিজ মাতৃভাষার বই পেয়ে খুশি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, নতুন বছরে নতুন দিনে আমরা আমাদের নিজ নিজ ভাষার বই পেয়ে অনেক খুশি লাগতেছে।

বান্দরবান আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহেদুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে আমরা অন্যান্য বইগুলোর সাথে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বই গুলো বিতরণ করেছি। এখানে বিশেষ করে তিনটি ভাষা, চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা ভাষায় প্রণিত হয়েছে এবং আমরা বই গুলো আমরা পেয়েছি। শিক্ষার্থীর হাতে হাতে আমরা বই গুলো তুলে দিয়েছি। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা বই গুলো পেয়ে খুব খুশী হয় কারণ তার মাতৃভাষার বই, জানা একটা ভাষা, শেখা একটা ভাষা এরকম বই গুলো পেয়ে তারা অনেক আনন্দিত। সরকারের এটা আসলে খুবই চমৎকার একটা উদ্যোগ। কিন্তু একটা বিষয় নিয়ে আমরা সমস্যা পড়ি। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এই বই গুলো সপ্তাহে অন্তত একা ক্লাস নেয়ার জন্য চেষ্টা করি। কিন্ত শিক্ষক সংকটের কারণে আলাদা করে এসব ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বই গুলো শিক্ষার্থীদের পড়ানো শিক্ষকদের আসলে কষ্ট হয়ে যায়। তবে পর্যায়ক্রমে যদি ভাষা ভিত্তিক বিশেষ করে ত্রিপুরা, চাকমা এবং মারমা ভাষা ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ করা হয় তাহলে মাতৃভাষার উপর পাঠদান সম্ভব হবে।

এদিকে বান্দরবান পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেনীর শিক্ষার্থীর অভিভাবক ¤্রায়ইনু মারমা বলেন, নিজেদের ভাষা ও বর্ণমালা শিখতে ও সংরক্ষণে সরকারের এ উদ্যোগ প্রশংসনীয় হলেও পর্যাপ্ত দক্ষ শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীরা এসব বই সঠিকভাবে পড়তে পারছে না। তাই বিদ্যালয়ে মাতৃভাষায় পাঠদানের জন্য প্রশিক্ষিত শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানান ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।

বান্দরবান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শফিউল আলম বলেন, সারা দেশের ন্যায় বান্দরবানেও বছরের প্রথমদিনে শিক্ষার্থীদের মাঝে পাঠ বই বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি পাহাড়ে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের মাঝেও নিজ মাতৃভাষার বই বিতরণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের মাতৃভাষার বিষয়ক ভিত্তিক শিক্ষক সংকটের কারণে ক্লাস নিতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে মাতৃভাষায় পাঠদানের জন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

উল্লেখ্য, বছরের প্রথম দিনে পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি নিজ মাতৃ ভাষার বই পেল চাকমা মারমা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ১১ হাজার শিক্ষার্থী।

পোস্টটি শেয়ার করুন:

আপনার মতামত দিন


© All rights reserved © 2021 Dainik Natun Bangladesh
Design & Developed BY N Host BD