শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:৩২ পূর্বাহ্ন
সানজিদা আক্তার রুনা,নাইক্ষ্যংছড়ি॥
বান্দরবান পার্বত্য জেলার নাইক্ষ্যংছড়িতে ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে পুলিশ আছে জনতার পাশে’ স্লোগানে কমিউনিটি পুলিশিং সমাবেশ-২০২৩ সম্পন্ন হয়েছে।শুক্রবার সকালে থানায় তদন্ত ওসি মোহাম্মদ শাহজাহানের সঞ্চালনায় ও নব নির্বাচিত উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং এর সভাপতি ও সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমনের সভাপতিত্বে উক্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবানের পুলিশ সুপার মোঃ.তারিকুল ইসলাম পিপিএম এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো.শফিউল্লাহ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমেন শর্মা ও ওসি টান্টু সাহা প্রমুখ।প্রধান অতিথি পুলিশ সুপার বলেন, মসজিদে আজান দেওয়া হল-নামাজের জন্য ডাক। তেমনি কমিউনিটি পুলিশিং হল পুলিশের কাজে জনগণের প্রতি ডাক। এই কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা চালু করা হয় প্রথম ইংল্যান্ডে এবং আমাদের দেশেও এই পুলিশিং ব্যবস্থা শুরু হয় অনেক আগে। এছাড়াও আমাদের কমিউনিটি পুলিশিং এর পাশাপাশি বিট পুলিশংও চালু আছে। তিনি আরও বলেন, কমিউনিটি পুলিশিং ও বিট পুলিশং এর মাধ্যমে পুলিশ জনগণের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে গিয়ে জনগণের সেবা করে এবং জনগণের সেবাকে ত্বরান্বিত করে। ইউএনও রোমেন শর্মা’র প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার বলেন, যেহেতু নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সাথে অন্য দেশের সীমানা আছে, সেহেতু অপরাধ প্রবণতা বেশি রয়েছে তাই পুলিশের দ্রুত মুভমেন্টের জন্য থানায় আরও একটি গাড়ি দরকার। চেষ্টা থাকবে গাড়ির ব্যবস্থা করা। পুলিশের কাজ সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রধান অতিথি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ হল জন্ম যোদ্ধা, পেশাদার যোদ্ধা, মানবিক যোদ্ধা। মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রশিক্ষিত পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল এই বাংলাদেশ পুলিশ। তিনি বান্দরবান সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, যেখানে ছয় ছয়বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও বর্তমান পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি আছেন, সেখানে উন্নয়ন এবং আইনশৃঙ্খলার বিষয় প্রশ্নাতীত। এছাড়াও তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য চারটি মানদন্ড নির্ধারণ করেছেন, স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট ইকোনমি ও স্মার্ট গভর্মেন্স। তাই আমাদেরও স্মার্ট পুলিশিং করতে হবে। এই বিষয়গুলো সম্পন্ন করতে পারলে দেশ ১৯৪১ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রুপান্তরিত হবে। তিনি পরবর্তী প্রজন্মকে বই পড়তে এবং সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হলে বেশি বেশি বই পড়া দরকার বলে জানান। কোন ছেলে-মেয়ে বই পড়লে মাদকের সাথে জড়িয়ে পড়বে না এবং বাল্য বিয়ের শিকারেও পরিণত হবে না বলে জানান।উক্ত সমাবেশে বিশেষ অতিথি উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ শফিউল্লাহ বলেন, কমিউনিটি পুলিশিং মানুষের আস্থা বিশ্বাসের সেতু বন্ধন তৈরি করেছে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ইউনিয়নগুলো অন্যান্য উপজেলার প্রায় সমান বা তারও বেশি, তাই ইউনিয়নের মানুষ তৎক্ষণাৎ পুলিশিং সুবিধা পাওয়ার জন্য পুলিশ ফাঁড়ি দরকার। সেজন্য চার ইউনিয়নে পুলিশ ফাঁড়ি থাকলেও দোছড়ি ইউনিয়নে পুলিশ ফাঁড়ি নেই, সেজন্য দোছড়ি ইউনিয়নে পুলিশ ফাঁড়ির কথা বলেন। এছাড়াও নাইক্ষ্যংছড়িতে এপিবিএন ব্যাটালিয়ন আসার প্রক্রিয়াকে তিনি সাধুবাদ জানান।বিশেষ অতিথি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমেন শর্মা বলেন, অতীতে পুলিশ সম্পর্কে ধারণা ছিল, পুলিশ অস্ত্র ও লাঠি হাতে অপরাধ প্রতিরোধ করবে, কিন্তু এখন সময় পাল্টে গেছে, অস্ত্র ও লাঠির চেয়েও শক্তিশালী অস্ত্র হল পুলিশ মানুষের মাঝে মিশে অপরাধ প্রতিরোধ করবে এবং এটি অপরাধ প্রতিরোধ আরও সহজতর হচ্ছে। তিনি থানার কাজ বেগবান হওয়ার জন্য আরও একটি পুলিশের গাড়ির কথা বলেন। সাধারণ পুলিশের চেয়ে কমিউনিটি পুলিশিং এর মাধ্যমে দ্বিগুণ অপরাধ কমানো যায় বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।এছাড়াও অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ভাইস-চেয়ারম্যানদ্বয়, হাজী এম কালাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদ্বয়, প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ ও উপজেলার সর্বস্তরের জনসাধারণ।
উল্লেখ্য, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার কমিউনিটি পুলিশিং এর নব নির্বাচিত কমিটি ঘোষণা করা হয়, এতে সভাপতি নির্বাচিত করা হয় সদরের চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমনকে এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয় স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি আব্দুস সাত্তারকে।
আপনার মতামত দিন