সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:৪৬ অপরাহ্ন
সোহেল কান্তি নাথ, বান্দরবান নিজস্ব প্রতিনিধি॥
বান্দরবানে অবৈধভাবে ঝিরি দখল করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের মাধ্যমে মেস্কিছড়া খাল দখলের প্রতিযোগীতায় নেমেছে একটি প্রভাবশালীচক্র। এতে করে হাফেজঘোনা থেকে ইসলামপুর পর্যন্ত এক কিলোমিটারের বেশি এলাকাজুড়ে দখলদারদের আগ্রাসনে মেস্কিছড়া প্রধান খালটি যৌবন হারিয়েছে। জেলা শহরের পানি প্রবাহের একমাত্র খালটি দখলের কারণে হাফেজঘোনা, শেরেবাংলা নগর, ইসলামপুর’সহ আশপাশের এলাকার স্থানীয় মানুষের পানির উৎস্যস্থল ধংস হয়ে যাচ্ছে। দখল প্রক্রিয়া চলমান থাকায় খালটি কোথাও কোথাও ছোট্ট হয়ে ড্রেনের মত বোঝা যাচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বৃহস্পতিবারও জেলা শহরের হাফেজঘোনা ষ্ট্রিলব্রীজ ও সাঙ্গু স্কুল এলাকায় মেস্কিছড়া খাল দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। অথচ কয়েকদিন আগেই স্থানীয়দের অভিযোগে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট গিয়ে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ এবং অবৈধভাবে খালের ভিতরে তৈরি করা স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দেন। কিন্তু তারপরও দখল প্রক্রিয়া থামছেনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা শহরের হাফেজঘোনার কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, মেস্কিছড়া খালের বেশির ভাগ অংশই দখল করেছে জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা ব্যবসায়ী কাজল কান্তি দাস। তার দেখানো পথেই ঠিকাদার জসিম, জুয়েল, বিএনপি নেতা সাঈদ, পরিবহন শ্রমিকনেতা অমল বাবুর বাগিনা’সহ আরও কয়েকজন মিলেমিলে খাল দখলের প্রতিযোগীতায় নেমেছে।
স্থানীয় হাফেজঘোনা বাসিন্দা চন্দন বিশ্বাস চান্দু বলেন, অর্থবিত্ত এবং ক্ষমতাবান ব্যক্তি হওয়ায় বাঁধা দেবার পরও তারা খাল দখল করে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করেনি। খালের ভিতরে ৫/৬ ফুট পর্যন্ত দখল করে স্থাপনা তৈরি করা হচ্ছে। খালটি দখল হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতায় রাস্তা ঘাটগুলো ডুবে যায়। সাঙ্গু জুনিয়র হাইস্কুল ও হাফেজঘোনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেতে পারেনা শিক্ষার্থীরা। খালটি দখলমুক্ত করার দাবী জানাচ্ছি।
ভুক্তভোগী স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, শুস্ক মৌসুমে নলকুপ ও আশেপাশের পাহাড়ী ঝরণার পানি শুকিয়ে যায়, তখন মেস্কিছড়া খালের পানিই তাদের দৈনন্দিন কাজের পানির চাহিদা মেটায়। মেস্কিছড়া খালের পানি দিয়ে তালাবাসন ধূয়া, গোসল করা’সহ যাবতীয় কাজ সম্পাদন হত। কিন্তু খালটি দখলের কারণে পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। পানির কষ্ট পাচ্ছে শ্রমজীবী দরিদ্র শ্রেণীর মানুষেরা। খালটি দখলমুক্ত করে পানি প্রবাহের পথ সচল রাখার দাবি জানান স্থানীয়রা। তবে খাল দখলের বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্তরা বলেন, তারা ক্রয়কৃত জায়গার উপরের স্থাপনা নির্মাণ করেছে।
স্থানীয় ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কামরুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, নিজের জায়গা ছাড়িয়ে খালের জায়গা দখল করে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। বিষয়টি প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া আফরোজ বলেন, ঝিরি দখল করে স্থাপনা নির্মাণের খবর পাওয়ার সাথে সাথে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তদন্ত করে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
আপনার মতামত দিন