শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:২৬ পূর্বাহ্ন
সোহেল কান্তি নাথ, নিজস্ব প্রতিনিধি বান্দরবান:
বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই উৎসব। এ উপলক্ষ্যে বৃহষ্পতিবার সকালে স্থানীয় রাজার মাঠে বেলুন উড়িয়ে সাংগ্রাই উৎসব এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। পরে পাহাড়ে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বিভিন্ন সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীদের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউট হল রুমে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে মারমা সম্প্রদায়ের বয়স্কদের নিয়ে এক বয়োজ্যোষ্ঠ পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ধর্মীয় গুরুসহ মারমা সম্প্রদায়ের নর-নারীরা উপস্থিত ছিলেন।
মূলত, পুরাতন বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে মারমা সম্প্রদায়ের লোকেরা পালন করে সাংগ্রাই উৎসব। পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসকারী মারমা সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব এটি। প্রতি বছর ১৩ এপ্রিল বর্ষবরণ কে ঘিরে শুরু হয় মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী এই সাংগ্রাই উৎসব। এদিকে এই উৎসবকে ঘিরে প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায় মারমা পল্লীগুলোতে চলছে নানা আয়োজন। বিভিন্ন ক্যাং ও বিহারে বিহারে চলছে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জলন, ছোইয়াং দানসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠান। নতুন জামা কাপড় পড়ে তরুণ-তরুণীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে বন্ধু-বান্ধন ও আত্মীয় স্বজনের বাসায়। শুধু তাই নয় একে অপর কে পানি ছিটিয়ে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানাচ্ছে সব বয়সী নারী-পুরুষ। আর বাড়ী বাড়ী আয়োজন করা হয়েছে হরেক রকমে খাবারের। সাংগ্রাই মারমা সম্প্রদায়ের উৎসব হলেও জাতী ধর্ম নির্বিশেষে সকলের অংশগ্রহণে উৎসবের নগরিতে পরিণত হয়েছে পার্বত্য জেলা বান্দরবান। উৎসবকে নিরাপদ ও নির্বিঘœ করতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার মো: তারিকুল ইসলাম। তিনি বলেন- প্রতিবছর বর্ষবরণকে ঘিরে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা সাংগ্রাই উৎসব পালন করে থাকে। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সব সম্প্রদায়ের মানুষ এই উৎসবে মেতে থাকেন। যেন উৎসব মুখর পরিবেশে উৎসবটি আয়োজন করতে পারে আমরা সেভাবে নিরাপত্তা জোরদার করেছি। পোশাকেও সাদা পোশাকে আমাদের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছে। যাতে করে আনন্দ করতে গিয়ে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
উল্লেখ্য, তিনদিন ব্যাপী বর্ষ বরণ উপলক্ষ্যে জল কেলি, পিঠা তৈরি, বুদ্ধমূর্তি ¯œান, বয়স্ক পূজা, হাজার প্রদীপ প্রজ্জলন ও নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে শেষ হবে মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই উৎসব।
আপনার মতামত দিন