শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:১৭ পূর্বাহ্ন
সোহেল কান্তি নাথ, নিজস্ব প্রতিনিধি, বান্দরবান
বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার দূর্গম পাইক্ষ্যং পাড়ার এলাকায় কেএনএফ এর ভয়ে পালিয়ে যাওয়া ৬৩টি পরিবার দীর্ঘ ৯ মাস পর নিজ গ্রামে ফিরে এসে। সোমবার দুপুরে পাইক্ষ্যং পাড়া এলাকায় ৬৩টি পরিবারের প্রায় ২শ জন বাসিন্দাদের মাঝে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বিনামূল্যে চিকিৎসা ও খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এসময় সেনাবাহিনীর সদর জোনের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদুল হাসান, উপ-অধিনায়ক মেজর এস এম মাহমুদুল হাসান, সেনাবাহিনীর চিকিৎসা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন আসাদুল ইসলাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, বান্দরবান ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন মো: ইয়াছির আরাফাত, রোয়াংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল কালাম, রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহ্লাঅং মার্মা, শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সদস্য ও বম সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি লালজার বমসহ সেনাবাহিনীর সদস্য ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় সেনাবাহিনীর সদর জোনের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদুল হাসান বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ হতে এবং স্থানীয় ক্যাম্প হতে ফেরত আসা সকল পরিবারের সদস্যদের সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হবে। তারই অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে প্রাথমিভাবে প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল সহায়তা প্রদানের কাজ শুরু করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন যাতায়াত না থাকার কারণে এ এলাকার রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা। যাতায়াতের সুবির্ধার্থে দ্রুত রাস্তা সংস্কার করা হবে। যাতায়াত ব্যবস্থা স্বাভাবিক হলে চিকিৎসা সহায়তা, শিশুদের শিক্ষা সামগ্রী, খাদ্য সহায়তাসহ নানা সহায়তা প্রদান করা হবে এবং অচিরেই স্থানীয় জনগণের মধ্যে শান্তি ও অথনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে বলে মনে করেন সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ এর আতঙ্কে নিজেদের ঘর বাড়ী ছেড়ে পালিয়ে যায় রুমা রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার দূর্গম বিভিন্ন পাড়ার হাজারো বাসিন্দা। শুধু তাই নয় গুম খুন চাঁদাবাজীসহ নানা অপরাধ মূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে আধিপত্য বিস্তার করে আসছিল সংগঠনটি। এর ফলে পাহাড়ে সৃষ্টি হয় অস্থিতিশীল পরিবেশ, থমকে যায় তিন উপজেলার কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পর্যটনসহ সরকারী বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড। এতে দূর্ভোগে পড়ে পর্যটক ব্যবসায়ীসহ জেলার সাধারন মানুষ। তাই পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষে কেএনএফ সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে আলোচনার উদ্যোগ নেয় শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি। পরবর্তীতে ভার্চুয়ালী কয়েক দফায় আলোচনা করা হলেও সর্বশেষ গত ৫ নভেম্বর আলোচনার টেবিলে বসে অস্ত্র বিরতিসহ ৪টি বিষয়ে সম্মত হয় উভয় পক্ষ। এরপর থেকে স্বাভাবিক হতে থাকে পাহাড়ের অস্থিতিশীল পরিবেশ। স্বস্তি ফিরে আসে দূর্গম এলাকার বাসিন্দাদের মাঝে। ইতোমধ্যে আতঙ্ক কাটিয়ে সেনাবাহিনীর সহায়তায় নিজ বাড়ীতে ফিরেছে প্রাতা পাড়া, খামতাং পাড়া, পাইক্ষ্যং পাড়াসহ বিভিন্ন পাড়ার দুই শতাধিক বাসিন্দা। দীর্ঘদিন পর নিজেদের ঘরে ফিরতে পেরে খুশি ফিরে আসা এসব বাসিন্দারা।
আপনার মতামত দিন